প্রতারণার অষ্ট ধাতুর আংটি!! হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।





কর্মজীবনের ব্যস্ততা যখন ঘনিয়ে এসে সন্ধ্যা হয় ঠিক তখনই দেখা যায় গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড় ঘিরেই গড়ে উটছে নানা রকম ব্যবসা। কেউ হকার, কেউ বা ঝালমুড়ি, লেবু পানি আর আচার। তারই মধ্যখান দিয়ে ছোট সাউন্ডবক্স আর কিছু সরঞ্জামপাতী নিয়ে বসে পড়ে প্রতারক আংটি ব্যবসায়ী। তেমনিভাবে প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে নজরে আসে রবিবার রাত ১০ টার চকবাজারে ব্যবসার জমজমাট আসর গড়ে তোলা এক প্রতারক আংটি ব্যবসায়ের। প্রচার মাইকের দিকেই কান দিলে শোনা যায়, " মামলা-মোকদ্দমা, প্রেমে বিচ্ছেদ, দাম্পত্য জীবনে কলহ, ব্যবসায়ে মন্দা, পরীক্ষায় ক্ষতি, গুপ্তশত্রু, আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি, হওয়া কাজে বাধা, হাজার চেষ্টা করেও যার উন্নতি হয়না, মিথ্যা বদনাম, বিবাহ কাজে বাধা- এই সব ই গ্রহের দোষ। এই সব গ্রহের দোষ কাটানোর জন্যে রয়েছে দৈবশক্তি অষ্ট ধাতুর আংটি। দাম মাত্র ২০১ টাকা"

আরো অনেক ধরনের প্রলোভিত কথার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মন গলিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ টাকা। এসব প্রতারক আংটি ব্যবসায়ীর গ্রাহক হিসেবে অনুসন্ধানে দেখা যায় দিনমজুর, শ্রমিক শ্রেণীর অশিক্ষিত যুবক ও বয়স্কদের। গত রবিবার রাত ১০ টা হতে ১১.৩০ এর মধ্যে অনুসন্ধানে দেখা যায় ১০০-১৫০ টির ও বেশি আংটি বিক্রি হয় যার বিক্রয়মূল্য দাঁড়ায় ২০০০০-৩০০০০ টাকা। অথচ পাইকারী বাজারে এসব আংটির মূল্য ৭-১০ টাকা।

প্রচার মাইকে তারা আরো বলেন, ডাক্তাররা রোগীদের খাওয়া দাওয়ার উপর যে নিষেধাজ্ঞা করে থাকেন তা সম্পূর্ণই ভুয়া এবং এই আংটি পরিধান করলে সব খাবার খেতে পারবেন কোন বাধা থাকবে না কোন রোগ হবেনা। বিক্রেতার সাথে কথা বলতে চাইলে প্রথমে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করলেও পড়ে চাপের মুখে কথা বলতে রাজি হয়। বিক্রেতা বলেন, এই আংটি টি সাধনার ফসল। এটি আটটি ধাতু দিয়ে তৈরি। আটটি ধাতু কি কি জিজ্ঞেস করা হলে তিনি সামনে থাকা আটটি বাটির দিকে নির্দেশ করে দেখান কিন্তু নাম বলতে পারেননি। এই আংটি পড়লেই এসব সমস্যার সমাধান হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন আপনার মনোবল আর বিশ্বাস থাকলে সব সমস্যা সমধান হয়ে যাবে। আংটির সাথে মনোবল আর বিশ্বাসের সম্পর্ক কি জানতে চাইলে তিনি বলেন এসব সাধনার ফসল-তর্ক করার বিষয় না। বিক্রেতা আরো বলেন তাদের বর্তমানে ২৬ টি শাখা আছে ৫২ জন বিক্রয়কর্মী আছেন। কিন্তু এই শাখাগুলো কোনটাই স্থায়ী নই। ট্রেড লাইসেন্স আছে কিনা জানতে চাইলে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন আমাদের এটাতো সাধনার ফসল এটার জন্যে লাইসেন্স লাগবে কেন। কোন কিছু বিক্রয় করতে গেলে লাইসেন্স এর প্রয়োজন হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন প্রয়োজন হলে তখন করে নিব। প্রশাসন এর অনুমতি নিয়ে বসেছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন আমাদের প্রশাসনের অনুমতি লাগে না-উপর মহলের অনুমতি আছে। উপরের মহল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলতে নিষেধ আছে বলে এড়িয়ে যান। বিক্রেতার নাম জানতে চাইলে নাম জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করে এবং ফোন নাম্বার চাইলে বলে আমার সিম এখন বন্ধ করে দিছে অফিস থেকে। নতুন সিম কেনা হয়নি এখনো।

Comments

Popular posts from this blog

এক নজরে কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়ন

আর্জেন্টিনার_ইতিহাস (History Of Argentina)